Hits: 10
২০ আগস্ট ‘স্বাধীন পলাশবাড়ী স্টেটের’ শতবর্ষ পূর্ণ হলো। ১৯২১ সালের এদিনে বিরাট জনসভা থেকে ঘোষণা দেওয়া হয় ‘স্বাধীন পলাশবাড়ী স্টেটের’।প্রতিষ্ঠা হয় স্বাধীন এক সরকার।
তৎকালীন ব্রিটিশ শাসন আমলে ১৯২০ সালের দিকে সমগ্র ভারতীয় উপ-মহাদেশে গান্ধীজীর অসহযোগ ও মুসলমানদের খেলাফত আন্দোলন দানা বেঁধে ওঠেছিল। তারই এক পর্যায়ে ব্রিটিশদের শোষণ ও জমিদারদের অত্যাচার এবং নিপীড়নের বিরুদ্ধে তীব্র গণ আন্দোলনের ধারাহিকতায় বীর জনতা ১৯২১ সালের ২০ আগস্ট এক বিরাট জনসভা থেকে ‘স্বাধীন পলাশবাড়ি স্টেট’ এর ঘোষণা দেয়।
ঐতিহাসিক সে জনসভায় বক্তব্য রাখেন, রংপুর কারমাইকেল কলেজের অধ্যাপক হীরেন্দ্রনাথ মুখার্জি। একই দিন স্বাধীন পলাশবাড়ীর পতাকা উত্তোলন করা হয় বর্তমান অফিসের হাট নামক স্থানে। জনসভা শেষে সংগ্রাম পরিষদের সম্পাদক এম. কে রহিম উদ্দিন স্বাধীন পলাশবাড়ীর ঘোষণা পত্র পাঠ করেন। সভায় উপস্থিত বিপুল সংখ্যক সাধারণ জনতা এবং তীর ধনুক হাতে হাজার হাজার সাঁওতাল স্বাধীনতা ঘোষণার সমর্থনে স্লোগান দেয়।
স্বাধীন পলাশবাড়ী স্টেটের একটি বিপ্লবী শান্তি সেনাবাহিনী ও একটি স্বেচ্ছাসেবক বাহিনী গঠন করা হয়েছিল, যার সর্বাধিনায়ক ছিলেন, মোহাম্মদ দারাজ হোসেন খান লোদী।
বৃটিশ প্রতিরোধের মুখে টানা তিনমাস স্থায়ী হয়েছিল এ সরকার। ঐতিহাসিক ‘স্বাধীন পলাশবাড়ী স্টেট ’ ঘোষণার শতবর্ষ উদযাপনে দিনব্যাপী নানা আয়োজন হাতে নিয়েছে ৫১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটি।
কমিটিতে মুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব.) মফিজুল হক সরকার আহ্বায়ক, সাইফুল্লা রহমান চৌধুরী তোতা, একরাম হোসেন বাদল ও উপাধ্যক্ষ শামিকুল ইসলাম লিপন যুগ্ম আহ্বায়কের দায়িত্ব পালন করছেন।
শুক্রবার (২০ আগস্ট) সন্ধ্যায় স্থানীয় বিশ্ব সাহিত্য কেন্দ্রের মিলনায়তনে শতবর্ষ উদযাপন কমিটির আহবায়ক বীরমুক্তিযোদ্ধা মেজর (অব:) মফিজুল হক সরকারের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান আলোচক হিসেবে বক্তব্য রাখেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব ও গবেষক অধ্যক্ষ জহুরুল কাইয়ুম। অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন আয়োজক কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক হাজী একরাম হোসেন বাদল, উপজেলা মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আব্দুর রহমান ও তৎকালীন স্বাধীনতা সংগ্রামীদের পরিবারের পক্ষ থেকে অনেকে।
বক্তারা বলেন, আমরা ঐতিহাসিক ‘স্বাধীন পলাশবাড়ী স্টেট’ ঘোষণার শতবর্ষ পূর্তি উদযাপনের মধ্য দিয়ে তৎকালীন প্রেক্ষাপট ও গৌরবময় ইতিহাস বর্তমান প্রজন্মের সামনে তুলে ধরতে চাই। তারা স্বাধীন পলাশবাড়ী স্টেট ঘোষণার স্বাধীনতা সংগ্রামী নেতাদের নাম সম্বলিত একটা স্মৃতি ফলক নির্মাণের দাবি জানান।
শেষে স্বাধীনতা সংগ্রামীদের মধ্যে ১৮জনের উত্তরসূরীদের মাঝে সম্মাননা স্মারক তুলে দেয়া হয়।
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সাপ্তাহিক দারিয়াপুর