Hits: 2
ষাট ও সত্তরের দশকে বাংলা গণসংগীতের নামকরা শিল্পী ফকির আলমগীরকে শনিবার দুপুরে খিলগাঁওয়ের তালতলা কবরস্থানে দাফন করা হয়েছে।
শুক্রবার ঢাকার একটি হাসপাতালে তিনি মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর।
তার ছেলে, মাসুক আলমগীর রাজীব বিবিসি বাংলাকে জানান, তার বাবা বেশ কয়েকদিন ধরেই করোনাভাইরাসের কারণে নানা জটিলতায় ভুগছিলেন।তিনি জানান, চলতি মাসের মাঝামাঝি তিনি জ্বরে আক্রান্ত হন। পরে করোনাভাইরাসের পরীক্ষা করতে দিলে, সেখানে রিপোর্ট পজিটিভ আসে।এরপর কাশি বাড়তে থাকলে ১৬ই জুলাই ফকির আলমগীরকে ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালের কোভিড ইউনিটে ভর্তি করা হয়।সেখানে তার পরিস্থিতির ক্রমেই অবনতি হলে কোভিড ইউনিটের আইসিইউ-তে স্থানান্তর করেন চিকিৎসকরা।এরপর শুক্রবার রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শিল্পীর পরিবারের কাছে জানান যে তার মৃত্যু হয়েছে।ভেন্টিলেটরে থাকা অবস্থাতেই তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে বলে জানানো হয়। এছাড়া তিনি আগে থেকেই ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপ জনিত সমস্যায় ভুগছিলেন। তার মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী, রাষ্ট্রপতিসহ শোক জানিয়েছেন সর্বস্তরের মানুষ। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে ঢাকার পল্লীমা সংসদ প্রাঙ্গণে ফকির আলমগীরের প্রথম জানাজা হয়।
সেখান থেকে তার মরদেহ নিয়ে যাওয়া হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে নাগরিক শ্রদ্ধাঞ্জলি দেয়া শেষে চৌধুরীপাড়া মাটির মসজিদে দ্বিতীয় জানাজা হয়। এরপর মরদেহ দাফনের জন্য নিয়ে যাওয়া হয় তালতলা কবরস্থানে। মৃত্যুকালে তিনি স্ত্রী, তিন সন্তান ও অসংখ্য ভক্তদের রেখে গেছেন।
বাংলাদেশের সব ঐতিহাসিক আন্দোলনে এই শিল্পী তার তাঁর গান দিয়ে মানুষকে উজ্জীবিত করার চেষ্টা করেছেন। ঊনসত্তরের গণ অভ্যুত্থান, একাত্তরের এর মুক্তিযুদ্ধ ও নব্বইয়ের সামরিক শাসন বিরোধী গণ আন্দোলনে তিনি তার গান নিয়ে সামিল হয়েছেন। স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে বাংলা পপ গানের বিকাশেও তার রয়েছে বিশেষ অবদান। বিশেষ করে তার দরাজ কণ্ঠে ‘ও সখিনা’, ‘চল সখিনা দুবাই যাব, ‘মন আমার দেহ ঘড়ি’, ‘আহারে কাল্লু মাতব্বর’, ‘ও জুলেখা’, ‘সান্তাহার জংশনে দেখা’, ‘বনমালী তুমি’ এমন আরও অসংখ্য গান গেয়ে তিনি ব্যাপক জনপ্রিয়তা অর্জন করেন। সঙ্গীতাঙ্গনে অবদানের জন্য ১৯৯৯ সালে একুশে পদক পান ফকির আলমগীর। এছাড়া শেরেবাংলা পদক, ভাসানী পদক, জসীমউদ্দীন স্বর্ণপদকও অর্জন করেছেন এই গুণী শিল্পী।
© ২০২১ সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত | সাপ্তাহিক দারিয়াপুর